বাংলাদেশ
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ইতিহাস
যে ভূখন্ডকে কেন্দ্র করে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে তার ভৌগলিক সীমানা মূলত আবহমান বাংলার প্রকৃতিক ও ভৌগলিক সীমারেখার একটি অংশ। ড. নিহাররন্জন রায়ের মতে, প্রাচীন কালে বাংলা বিভিন্ন জনপদে বিভক্ত ছিল ও জনপদসমুহ সমতট, বঙ্গ, পুন্ড, বরেন্দ্র, হরিকেল, তাম্রলিপি, নামে বিভক্ত ছিল। প্রাচীনকালে গৌড়ধিপতি শশাঙ্কের (৬০৬-৬১৯ খ্রি.) স্বাধীন স্বার্বভৌম সাম্রাজ্যের মাঝে বাংলার ভৌগলিক সীমার চিত্র জানা যায়।
মধ্যযুগে মুসলিম শাসনামলে শাহে বাংলা বলে খ্যাত সুলতান শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ বাংলার বিভিন্ন জনপদের স্বাতন্ত্র্য ঘুচিয়ে এক খন্ড ভৌগলিক রাষ্ট্রীয় সত্তায় আবদ্ধ করেন। মোগল সম্রাট আকবরের (১৫৫৬-১৬০৬) শাসনকালে সমগ্র বাংলা ‘সুবাহ বাংলা’ নামে পরিচিত হয়ে উঠে।
আধুনিক যুগের সূচনালগ্নে বাংলাকে বিহার, উড়িষ্যার সাথে একিভূত করে ইষ্ট ইন্ডিয়া কম্পানির গভর্নর জেনারেলরা শাসন করতো। ১৮৫৪ সালে গভর্নর জেনারেল লর্ড ডালহৌসী (১৮৪৮-১৮৫৬) নতুন বাংলা প্রদেশের সূচনা করেন। এ সময় বাংলা প্রদেশের অর্ন্তভূক্ত উপরিভাগ ছিল বেঙ্গল প্রপার, বিহার, উড়িষ্যা ও ছোট নাগপুর। ঐ সময় প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে বাংলা প্রদেশের ভৌগলিক সীমানা ছিল হিমালয় ও তার পাদদেশে নেপাল , ভূটান পর্যন্ত।
বাংলা প্রদেশ কে ব্রিটিশ সরকার ১৮৭০ সালে আবার সংকুচিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলা থেকে কাছর ও সিলেটকে আলাদা করে আসাম নামে নতুন প্রদেশ ঘোষনা করা হয়। ১৯০৫ সালে ইতিহাস খ্যাত বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে ইংরেজরা পূর্ব বঙ্গ ও আসাম কে একটি প্রদেশ ও পশ্চিম বঙ্গকে পৃখক প্রদেশ হিসেবে ঘোষনা করে। বাংলা ভূখন্ডের পূর্ব অংশই ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন স্বার্বভৗমরুপে আত্মপ্রকাশ করে, যার নাম হয় বাংলাদেশ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন